 খোলা জানালা
খোলা জানালা
১ বর্ষ,সংখ্যা-১/১১নভেম্বর ২০১২
এই সংখ্যায় যারা লিখেছেন::>
কমল প্রামানিক,ওমকার অধিকারী,নশিদা খান চৌধুরী,হরপ্রসাদ রায়,বিশ্বজিৎ বিশ্বাস,অর্ণব ভট্টাচার্জী,রুদ্রশংকর, এবং নির্ঝর নৈশব্দ।
সম্পাদকের কথা =>
                                                                                দেশ ব্যাপী আলোর উৎসব আসন্ন।জন-জীবনের সব অন্ধকার দূর    করে
নির্মল প্রদীপ শিখার প্রজ্বলন হয়ত কিছুতেই সম্ভব নয়,কিন্তু স্বপ্ন দেখতে
বাঁধা নেই।আসুন সবাই মিলে ব্যক্তি ও সমাজের কলুষতা-গ্লানিকে মুছেদেওয়ার গভীর স্বপ্ন দেখি,আর তাকে যতটা সম্ভব রূপায়ন করতে যত্ন-
বান হই।
একটু একটু করে লালন পালন করলে পৃথিবীকে সুন্দর এবং মানুষের বাস-
যোগ্য করতে কতদিন আর লাগবে?এক'শ-দু'শ বছর। আমরা থাকবো না,
আমাদের সামন্যতম অবদান অদূর-ভবিষ্যতে উত্তর প্রজন্মের কাছে অসামান্য
হয়ে উঠবে।আসুন যে যেখানে যেভাবে আছি,সেই যায়গাটাকে ভালোবাসি,সংস্কারও সুন্দর করে তুলি।
এবার 'খোলা জানালা' প্রসঙ্গে বলি,ছাপা লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ বা সম্পাদনার
কিছু অভিজ্ঞতা থাকলেও অন্তর্জালে লেখা-লিখি এমন কী তার ব্যবহার বিষয়ে
আমি নিতান্ত অনভিজ্ঞ।তাই সবার পরামর্শ ও সহযোগিতা আশা করছি।
শুধু ব্যক্তিগত অনুভূতি নয়,সমাজ-শিক্ষা-সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ে লেখা
পাঠিয়ে খোলা জানালার মুক্ত বায়ুকে সুরভিত করে তুলুন-এই অনুরোধ।
প্রতি মাসের ১১ তারিখে পত্রিকা প্রকাশ পাবে। সেই মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত
পাওয়া লেখা ও ছবি প্রকাশের জন্য বিবেচনা করা হবে।পত্রিকার সব লেখা ও চিত্রেরসমালোচনা এবং গঠনমূলক পরামর্শ স্বাগত।
সব্বাইকে দীপাবলির উষ্ণ-উজ্জ্বল অভিনন্দন জানাই।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
*********************************************************
ব্যর্থ প্রেম
: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
       প্রতিটি ব্যর্থ প্রেমই আমাকে নতুন অহঙ্কার দেয়
       আমি মানুষ হিসেবে একটু লম্বা হয়ে উঠি
      দুঃখ আমার মাথর চুল থকে পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত
                                          ছড়িয়ে যায়
      আমি সমস্ত মানুষের থেকে আলাদা হয়ে এক
                              অচেনা রাস্তা দিয়ে ধীর পায়ে
                                   হেঁটে যাই.........(আংশিক)
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
কবিতা>:
-------------------
(১) উড়ান
                          ::কমল প্রামানিক                                                                                          
                কতবার ডেকেছি।শোননি। ঠিক কাজ করেছিলে।
                যদি আসতে,চলার ছন্দ-পতন হতো।
                অহংকার গ্রাস করতো,ভুলের পরিমার্জনা যেত থেমে।
                ব্যাপারটা বোঝার পর থেকেই,আমি আমার
                মতো থাকার তালিম নিয়েছি,আমিত্বের
                ভাড়ারে সঞ্চয় করেছি জেদ নতুন
                রঙ বেরঙের ঘুড়ি ওড়াবার জেদ।
               হ্যাঁ,আগমনীর সকালেই উদ্বোধন।
               আকাশে মেঘ থাকুক না থাকুক-
               রাত পার হলেই উড়ান শুরু।
               তুমি কি আসবে,সকালে?::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
(২) পানসি
                             :: কমল প্রমানিক
               নিঃসঙ্গ পানসি বাঁধা আছে ঘাটে
               নদী কলকল্লোলে হেঁটে চলেছে
              সাগর বাড়ীতে যাবে বলে।
              বেপরোয়া তার উচ্ছ্বাস,অভিলাস।
                          ইচ্ছাধীন নিরুদ্দেশ বলাকারাও
                          নীল নিষেধ ডিঙিয়ে যায়,
                          সম্মিলিত কলতান দিগন্তে মিলায়
                          প্রতিধ্বনীও হারিয়ে যায়।
                          পুরনো আর নতুন বাজারের
                          দুটো চিঠি বুকে নিয়ে         একা
                                          ভেসে থাকে পানসি।
               আনচান করেনা,গতি সামলায়
               ভাবে আর অবাক চোখে চেটে নেয়
               পরঘাটায় কূল-ভাঙা যুবতির
                                              যৌবন যাপন।
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::: 
         
           বে-হিসেবি                                                              
:: ওমকার অধিকারী
:: ওমকার অধিকারী
                কিছু প্রত্যাশা নেই ,তাইতো তোমাকে
                সব কিছু দিতে পারি 
                নির্দ্বিধায়
                কলঙ্ক ছাড়া।
                               কিছু ফেরাবে না জানি,কিন্তু 
                               সব কিছু দিতে চাইলেও
                               সে বড়ো ভার-
                                অক্ষম আমি।
              এখন নাহয় তোমার উপেক্ষা গুলো
              যত্নে তুলে রাখি,
              সেই সব না চেয়ে পাওয়া স্মৃতির
              স্বর্ণখনি আর
               ব্যথার বৃন্দগান।
                               তুমি বাস না বলেই নিঃসঙ্কোচে
                               অতলান্তিক ভালো বাসতে পারি,
                               বাধা হীন
                               বে-হিসেবি।**********************************************
***********************************************************
(১) হিম বৃষ্টি
                                       :: বিশ্বজিৎ বিশ্বাস 
                    চাঁদের কিরণে ঝলসে যাচ্ছে শরীর
                             ছাতাটা ধরেছি
                             মাথার ওপর।
                    ব্যালকনির ওপর থেকে
                             ঝরছে তেড়ছা দু'চোখের
                              জিজ্ঞাসু দৃষ্টি।
                   ঝাঁপসা হয়ে হাসছে সময় ,ক্রমশ..........
                                 ব্যথা-অব্যথার সন্ধিক্ষণে এসে
                                 থমকে দাড়াই আমি।
                   কুয়াশার চাদর আড়ালে
                          বিসর্জনের দোলায় আবির্ভূতা
                                        এ কোন অবয়ব।
                   তখনই নামলো হিম বৃষ্টি,আর
                             হেসে উঠল শবনম।
                        --------------------------
(২) মধ্য-রাতের স্বপ্ন
                        :: বিশ্বজিৎ বিশ্বাস
স্বপ্ন গুলো আসে নীল অন্ধকারে
আসে মধ্য-রাতে বার বার
কল্প-সুতো দিয়ে বাঁধি তাদের
নগ্ন মুখোশ গুলো ভীর করে
আমার পোড়া চেতনায়,
সব ভুল পাশ কাটিয়ে চলে যায়
চরম বাক্ চাতুরতায়।
স্বপ্ন গুলো হাসে,হেসে ওঠে
আমাকে দেখে বার বার
মধ্য-রাতে।
বাঁধন ছিড়ে ছড়াই তেপান্তরে।
স্বপ্ন গুলো বড়ো বেহায়া
তবুও আসে,বার বার
মধ্য-রাতে।
           
                    
                   
স্বপ্ন গুলো আসে নীল অন্ধকারে
আসে মধ্য-রাতে বার বার
কল্প-সুতো দিয়ে বাঁধি তাদের
নগ্ন মুখোশ গুলো ভীর করে
আমার পোড়া চেতনায়,
সব ভুল পাশ কাটিয়ে চলে যায়
চরম বাক্ চাতুরতায়।
স্বপ্ন গুলো হাসে,হেসে ওঠে
আমাকে দেখে বার বার
মধ্য-রাতে।
বাঁধন ছিড়ে ছড়াই তেপান্তরে।
স্বপ্ন গুলো বড়ো বেহায়া
তবুও আসে,বার বার
মধ্য-রাতে।
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
দুয়ার খুলে আসতে দাও
;-; নশিদা খান চৌধূরী
| 
                           ভালোবাসাকে মনের দুয়ার খুলে আসতে দাও ভেতরে, অতিথি নয়, পরম আপনের সে অভ্যর্থনা। সে আসবে, হাসবে, খেলবে, গাইবে, ঝগড়া করবে, উৎকন্ঠায় ফেলবে, নিংড়ে নেবে, নিয়ে যাবে চুড়ান্ত কোন অশান্তির সাগরে.... ভাসিয়ে দেবে, ডুবিয়ে দেবে, উথাল পাতাল সম্পর্কের টানা হেঁচড়ায় উঠিয়ে আনবে আনকোড়া তীরে....... জানোতো! ভালোবাসা বল্গাহীন এক নির্মল প্রবাহ !!! ফিরে দেখ ভালোবাসাকে বিষক্রিয়া হয়ে দাঁড়ায় কোথাও সে আবার, কোন এক মুহুর্তে অমৃতবাণী ঝড়াবে তোমার কন্ঠস্বরে; ব্যথা, বেদনা, জ্বালা, যন্ত্রণা - শুষে নেবে তার অতল ঘূর্ণাবর্তের সাথে। তাকিয়ে দেখ খোলা জানালায় - ডানাকাঁটা পরিযায়ীদের মত যখন ছটফট করবে কোন এক অনন্তে দাঁড়িয়ে, ভালোবাসা তখন - দু'হাত উজাড় করে ডেকে নেবে তার কাছে। অপেক্ষামুহুর্তের, অপেক্ষা শুনতে পাবার, অপেক্ষা অজানা ভালোবাসার। চেনা তবু যেন অচেনা। 'ভালোবাসা তুমি চির নতুন' ।। 
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::: নীলতারার রূপকথা:: হরপ্রসাদ রায়
               চার পাশে জলছবি নীলতারা ইচ্ছেরা 
               ছড়ানো 
               কার যেন পাচ্ছে খোঁজ 
               আবেগে তীর ছেঁড়া 
               নদীটার দুই কূলে 
               রোদ বিকেলে একলাটি গোধূলী লাল পলাশ 
               নিকানো 
               কেউ যেন কোন ফাঁকে 
               দেখছে তা ছাদ থেকে 
               আনমনে চুল খুলে 
               নীল পথে কউ খোঁজে সাথী আর 
               ঠিকানা 
               এড়িয়ে ভীড় পাহাড় 
               নির্জনে মন খুলে 
               দিচ্ছে ডুব কবিতায় 
               এক সাথে সরগমে গাইবে সে ইমনের 
               ব্যঞ্জনা 
               ছায়াপথ মাঝপথে ছাড়িয়ে 
               রাখছে তাই তার বেঁধে 
               নীলতারার রূপকথায় 
               চাঁদ এলে আবছায়া 
               আলোতে গুলবে সেলজ্জাকে। :::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::: | 
উৎসব
:: রুদ্রশংকরকত দিনরাত মুখস্থ দেখি
কত দিনরাত লবনে পান্তা ফুরোয়
ভাসিয়ে দিয়েছি রাতপোশাকের সাধ
কাম ও করুণা তরুণী মাছেরা বিলোয়
অচিন গাঁয়ে মরা শ্রমিকের ছেলে
জলে বারুদে ঘষছে কঠিন জীবন
সাদা চাদরে ইনামে ইনাম তুলে
নীল সেলামে শহীদ যাবজ্জীবন
হারেমে মায়েরা দু'হাতে কান্না- ভাসায়
বহতা যুবক আসবে না চৌকাঠে
সরল গাঁয়ের শালিকচরা দুপুর
নিলাম ডাকে রিপুপেরেকের মাঠে
কত দিনরাত জলে ডোবে খড়কুটো
কত দিনরাত গুটিসুটি মেরে থাকি
রক্তে ভাসে ভাইদের মৃতদেহ
নবাব ভোটের ব্যালটে নিলেন ছুটি
আমরা আগামী বৃষ্টির মাথা ধরে
আলোর গল্প রাতের বেলায় শুনি
টুকরো টুকরো উপহাস পুড়ে গেলে
মেয়ের পিছনে মেয়ে দেখে ব্যাসমুনি
আমাদের কেউ কয়লা রঙের আলো
আমাদের কেউ জ্যোৎস্নায় জন্মাবে
আঙুল থেকে খুলে যায় মৃত ভুল
আমাদের নেশা সৃজনের উৎসবে !
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
অণু-গল্প //
মাত্রাবৃত্তের ভাঙন
:: নির্ঝর নৈশব্দআকাশ মেঘে মেঘে ঢেকেছিলো একদিন ভোরের পরে।পুকুর ঘাটে দুইটি বউ কথা বলছিল
পরস্পর ।ভেজা গা থেকে ঘষে ঘষে তুলছিল রাতের ক্লেদ ও রঙ।
কী লো,কাল রাতে হুনলাম তোমাগো বাড়িত ডাকাইত পড়ছিলো?
-হ
তয়,তুমারে এমুন খুশি খুশি লাগতাছে,ক্যালা?
উত্তর নাই।পুকুরের সবুজ জলে ভাসছে পদ্মপাতা।ঝিরঝির শব্দে হাওয়ার সাথে কানাকনি করছে পদ্মের কুড়ি।পদ্ম মানে মৃণাল।একটি পদ্মপাতায় আনন্দে ঘুরে ঘুরে গড়াগড়ি খাচ্ছে একটি হলুদ রঙের ঢোঁড়া
সাপ।শুনছিল দুই বউয়ের আলাপ-সালাপ।
-তুমার শইলে নাকি হাতাইছে,শাড়ি খুলছে ?কেমুন কওতো দেখি?
উত্তর নাই।তবে প্রত্যুত্তরে পরিতৃপ্তির হাসি।ঢোঁড়াসাপ মাথা উঁচু করে দেখে ফেলে বিমল পরিতৃপ্তি।এবং অপমানে নীল হতে থাকে তার হলুদ গায়ের রঙ।সে পদ্মপাতার বৃত্তাকার ঘের ছিন্ন করে পুকুরের জলে নেমে পড়ে,রাগে আক্রোশে তড়পায় সারাটা পুকুর।তার গায়ের নীলে পুকুরের জল ক্রমে নীল হতে থাকে।
নীল আকাশ থেকে সরে যেতে থাকে হেমন্তের মেঘ।নীল জল এসে পরিতৃপ্ত বউয়ের পায়ের নখ ছোঁয়ার আগেই তার স্নান শেষ হয়।
****************************************************************
****************************************************************
বিঃদ্রঃ গত কাল স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য পত্রিকা প্রকাশ হয়নি।
আমি অত্যন্ত দুঃখিত।ক্ষমা প্রার্থী।
সন্মানীয় কবি ও লেখক বন্ধুরা নিয়মিত লেখা ও ছবি পাঠিয়ে
পত্রিকাকে সমৃদ্ধ করবেন-এই আবেদন করছি।
 
প্রথম সংখ্যাটি পড়লাম । বেশ ছিমছাম ব্লগ । বিশ্বজিত বিশ্বাস , কমল প্রামাণিক'এর লেখা আগে পড়িনি । বেশ ভালোই লেখেন। প্রণবকে আমার শুভেচ্ছা ।
উত্তরমুছুনnam thakleou lekha ta khuje pelam na,,,,,,,,
উত্তরমুছুনঅর্ণব ভট্টাচার্যীর কাছে ক্ষমা চাইছি।আমার অসতর্কতার জন্য এই বিভ্রাট হয়েছে।আপনার লেখাগুলো ইংরেজি ফন্টে ছিল,বাংলায় ফরম্যাট করেছি কিন্তু পোষ্ট হয়নি।অত্যন্ত দুঃখিত।পরের সংখ্যায় অবশ্যই ভুল হবেনা।সাথে থাকবেন। -সম্পাদক।
উত্তরমুছুন