খোলা জানালা
প্রথম বর্ষ -২ সংখ্যা /১১৷১২।২০১২
-----------------------------------
-----------------------------------
এই সংখ্যায় যাঁরা লিখেছেন --
**********************************************
**********************************************
কবিতা::কমল প্রামানিক ,বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায় ,অমিতাভ দাশ ,সৌমিত্র চক্রবর্ত্তী ,ওয়ালিনা চৌধুরী ওভি ,গোধূলির আলো ,সুকুমার চৌধুরী ,বিশ্বজিৎ বিশ্বাস ,সৌরভ সাহা ও প্রণব দে ।
অনুগল্প //কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ।
ভাবনা -বৃত্তান্ত ।। প্রণব দে
===========
খোলা জানালার সকল পাঠক ,লেখক,সহযোগীদের শুভেচ্ছা সাথে নিয়ে প্রথম বর্ষ সংখ্যা-২ প্রকাশ পেল।ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা পাওয়ার প্রত্যাশা রইল।
কিছু অনুভবের কথা বলতে বসে বিভ্রান্ত বোধ করি।শিক্ষা-সমাজ-অর্থনীতি সম্পর্কিত অসংখ্য অভিযোগ-অভিমানে মন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।আজ শিক্ষার অধিকার বিষয়ে আমার দু'একটি ভাবনার কথা বলি।
এই অধিকারটিকে যেভাবে প্রচার ও প্রয়োগ করার চেষ্টা চলেছে তার মূল কথা হল ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত রাখা।ভালো প্রচেষ্টা।কিন্তু বিদ্যালয়ে ধরে রাখা,পুষ্টি নিশ্চিত করতে মিড ডে মিলের আয়োজন করলেই তারা ভবিষ্যত জীবন-যাপনের উপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠবে এমন নিশ্চয়তা কোথায়?কিছু না শিখেই বিদ্যালয় গন্ডি পার হবার যে পথ গত কয়েক দশকে রচিত হয়েছে তা আরও অবাধ হতে চলেছে।বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকেও জীবনের ভিত্তি বছর গুলোর এই অপচয়ের বোঝা তাদের সারা জীবন বয়ে যেতে হবে।এই অপূরণীয় ক্ষতি শুধু ব্যক্তিগত নয়,সমগ্র জাতির।
সরকার অর্থাৎ জনগনের ঘাম ঝরানো রাজস্ব থেকে যাদের বেতন আসে তারা যে ১২০ কোটি ভারতীয়র অধীনস্ত কর্মচারী-এই বোধটাই গড়ে ওঠেনি।ফলে দায়বদ্ধতার অভাব সর্বত্র।শিক্ষা ক্ষেত্রে কিছু আদরণীয় ব্যতিক্রম বাদ দিলে সাধারণ চিত্রটা একই রকম।অন্য বিভাগ গুলোয় তাও কাজ আদায়ের একটা ন্যুন্যতম ব্যবস্থা আছে।কিন্তু আপনার বা আমার সন্তান বিদ্যালয়ে নিয়মিত হাজিরা দিয়ে মাধ্যমিক বা সমতুল পরিক্ষায় পাশ করেও বাস্তবে অশিক্ষিতই থেকে গেল কেন,এই জবাব দেওয়ার বা নেওয়ার কেউ নেই।
এই ভাবে শিক্ষার অধিকারের আড়ালে ভবিষ্যতের সাধারণ ভারতীয়দের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করার ব্যবস্থা হয়েছে।মানুষ যত বুঝতে পারছে সরকারি বা সরকার পোষিত অধিকাংশ বিদ্যালয়ের কোনো অভিভাবক নেই,সেখানে কার্যকর শিক্ষার সুযোগ থাকলেও সেই শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার কোনো দায়বদ্ধতা নেই ,তত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর রমরমা বাড়ছে।আর জাতিকে উপযোগিতাহীন অসংখ্য প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিদানহীন অসংখ্য কর্মচারীর বেতন দিতে হচ্ছে।জাতির প্রতি দায়িত্ব পালন না করে,চাকুরে হয়ে প্রায় বিনাশ্রমে বেতন আর হাজারও সুবিধা,সামাজিক সন্মান ভোগ করে চলেছি আমরা অনেক-অনেকেই।ভুলেই থাকি প্রতিদানহীন হাত পাতে যারা তাদের ভিখারি বলে।
আহা যদি এমন হত-প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকার সন্তানদের(বয়স সীমায় থাকলে) তারা যে বিদ্যালয়ে কর্মরত সেখানেই ভর্তি করতে হবে !তবে হয়তো সাধারণের সন্তানদের ক্ষতির বহর তাঁরা উপলব্ধি করতেন।বলতে পারেন এসব ভাবনার ভিত্তি কী? আমার অভিজ্ঞতা আর বিগত প্রায় দুই দশকের পর্যবেক্ষণ।অতি বেদনার সাথে লক্ষ্য করছি -মাধ্যমিকে স্টার পাওয়া বহু ছাত্র-ছাত্রীর সাধারণ ভাষা জ্ঞান নেই,অতি সাধারণ ইংরেজি বা বাংলা শব্দ পরিচিতিও নেই।দেশ-রাষ্ট্র,সমাজ-ইতিহাস, বিজ্ঞান কোনো কিছুতেই আগ্রহী নয় তারা।যেন তেন ভালো নম্বর ছাপানো মার্কশিট পাওয়াই তাদের লক্ষ্য।তাই তো জাতি বা বিশ্ব- বরেণ্য ভারতীয় বা বাঙালি বিজ্ঞানী,অর্থনীতিবিদ্ ,ইতিহাসবিদ্ আজ বিলুপ্ত প্রায়।ভবিষ্যত পরিনতি বুঝতে অসুবিধা নেই।জানি না আশার আলো কে দেখাবে।
তবুও আশায় থাকবো শিক্ষার সাথে যারা জড়িয়ে আছেন তাঁরা অন্য পেষার সঙ্গে নিজেদের বৃহত্তর দায়িত্বকে গুলিয়ে ফেলবেন না।উচ্চ বেতনের একজন সরকারি-বেসরকারি কর্মচারির তুলনায় আজও একজন শিক্ষককে সমাজ বেশি সন্মান দেয়।সেই সন্মানের যোগ্য কর্তব্য পালন না করে কী করে আপনি বা আমি দু'কান নিয়ে সমাজে মুখ দেখাচ্ছি।লজ্জা আর লজ্জা।
আসুন সেই দিন নিয়ে আসি যেদিন জেরক্স(ফটো কপি)এর দোকান গুলোর ৮৫ শতাংশ ব্যবসা পরিক্ষায় টুকলি করার সুযোগ নেওয়ার জন্য উত্তরের মাইক্রো কপি করা থেকে আসবে না।নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষক তাঁর টিউশন ক্লাসে টেনে নিয়ে যাবেন না।(হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীকে সেখানে চিকিৎসা না করে কোনো ডাক্তার তাঁর চেম্বারে দেখাতে বললে তা আইন বা নীতি সম্মত?)।
বলবেন উপযুক্ত পরিকাঠামো পরিবেশ-পরিস্থিতি নেই যেখানে প্রকৃত শিক্ষা দেওয়া যায়।বাস্তব সত্য।আচ্ছা আমাদের ফ্ল্যাট বাড়ির নাইট গার্ড যদি বলেন রাতে খুব মশা কামড়ায়,গেটের কাছে শুয়ে ঘুমানর পরিকাঠামো নেই,তাই স্টোর রুমে গিয়ে ঘুমাই।তাঁর চাকরি থাকবে ?পরিকাঠামো উন্নত না হওয়া পর্যন্ত তাঁর সবেতন বিশ্রাম দেবেন ?ভারতে রাত্রে কেন, দিনেও মশা কামরায়,নাইট গার্ডের কাজে ঘুমের কোনো সুযোগ নেই।তাই ভদ্রলোকটির চাকরি যাওয়াই স্বাভাবিক ।আমরা যারা শিক্ষক হচ্ছি তাঁরা দেশের শিক্ষা কাঠামো-পরিবেশ সম্পর্কে নিশ্চই জানি ।যদি না জানি তবে আমরা শিক্ষিত নই,অতএব শিক্ষক হওয়ার উপযুক্ত নই ।আর দায়িত্ব নেওয়ার পর যদি কিছুতেই পরিবেশ-পরিস্থিতি শিক্ষাদানের উপযুক্ত হচ্ছেনা দেখেন ,তাহলে পদত্যাগ করুন।আত্ম-গ্লানি বলে কিছু অবশিষ্ট থাকলে মুক্ত হতে পারবেন ।সম্মানের সাথে অন্য পেষায় চলে যেতেও পারেন ।তাতে অন্তত ভবিষ্যত প্রজন্মকে নষ্ট করার দায় আপনার ওপর চাপবে না।
ক্ষোভ আর হতাশা থেকে অনেকের বলতে চাওয়া কথাই আমি বলতে চেয়েছি।মহান শিক্ষক শ্রেণিকে আহত করা আমার উদ্দেশ্য নয়,যারা শিক্ষক সেজে আছেন,যাদের অন্য যা কিছু হলেও চলত তাদের প্রতিই এই অনুযোগ।
ব্যতিক্রমী দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠান আর প্রনম্য শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখাও অনেক।তাঁরাই আশার প্রদীপটুকু আগলে রেখেছেন।কোনো অসৌজন্যতা দেখলে ক্ষমা করবেন।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------
কবিতা
------------
হারিয়ে যেতে নেই মানা
--কমল প্রামানিক।
তখনই শিশির বৃষ্টি নামল
ভিজলে তুমি,আমিও ।
তোমার ভেজা শরীর চুঁইয়ে অদ্ভূত গন্ধ ছড়াল
লজ্জাবনত চালতা ফুলের মতো কাঁপছিলাম
শিরিষ পাতার নিস্তব্ধতায় ভাবছিলাম --
অন্ধকার জঙ্গলে সুখের নুড়ি কুড়িয়ে
জ্বালামুখে গলছি কেন ?
মোম জ্যোৎস্না-মাখা আরও একটা
তাজমহল তো গড়তেই পারি
শিশির ভেজা পাঁপড়িতে চুমু দিতে
সাদা ঘোড়া ছুটিয়ে দিতেই পারি--
তোমার আগ্নেয় তেপান্তরে দিকে।
----------------------------------------------------
----------------------------------------------------
----------------------------------------------------
আবহমান নীরবতা
-বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায় ।
অসম্পূর্ণ কথাগুলো আজও নির্বাক
স্তব্ধতার ওপারে সংকেতচিণ্হের দেওয়াল ঘেঁষে।
প্রলাপের ভেতর থেকেজেগে ওঠার
কথা ছিল কবিতার.......
নীলাঞ্জন লিখেছিল-তীব্র শব্দ চাই।
অনর্গল প্রলাপ ও উন্মাদনা।
রোদের মধ্যেও দুর্গন্ধ বাতাস
নীরবতা !
নীলাঞ্জন বলেছিল-কবিতা শুধু কবিতা চাই
নীরবতা !
*****************************************
******************************************
******************************************
কোজাগরী
-অমিতাভ দাশ ।
মাইলের পর মাইল ছিল কবিতা ছড়ানো....
তোমায় তোমায় নিয়ে হেঁটেছি জ্যোৎস্নায়
স্বচ্ছ শরীরে শরীর।
ছাতিমেরা নির্বিকার অনায়াস ঘুমঘুম
গন্ধ পালক উড়ানে......
মাটির গভীরে গান ,
মৈথুন-নিবিড় ও শিথিল যুগপৎ ,
কে বেশি আচ্ছন্ন অনাবিল।
করলো তোমায় ভিজিয়ে পুড়িয়ে সোহাগে জ্যোৎস্নায়
সে না জেনে ,
চাঁদের উঠানে ওই
কুড়িয়ে নিয়েছি ,গন্ধ ,পালক ,ও কবিতা
জ্যোৎস্না-মাখা মাটি-গান....
পরতে পরতে
খুলে অভিমান সব,দুহাতের নরমেই
আশ্চর্য মায়াবী জড়ানো
ছিল তোমার আমার
মৃত্যু.......
মাইলের পর মাইল ছিল কবিতা ছড়ানো....
হেঁটেছি জ্যোৎস্নায়
স্বচ্ছ শরীরে শরীর যেদিন
তোমাকেই নিয়ে দিকভুল.....
-------------------------------------------------------------------------------------
-------------------------------------------------------------------------------------
শব্দ দিয়ে শব্দ গড়ে
--সৌমিত্র চক্রবর্ত্তী ।
টগবগিয়ে ছোট্টবেলা ফিরছে আমার ইচ্ছে ঘরে
শব্দগুলো নাচনী হয়ে নাচছে বেভুল ঝুমুর পায়ে,
খুনখারাবী আকাশী রস ফুটছে এসে হাতের মুঠোয়
হাল্লা মাতাল একশো তরুণ কদম ফেলে পাল্লা দিয়ে।
চলছে এখন ভাঙাগড়া নিজেকে শও টুকরো করে
সত্তাগুলো বাচ্চা হয়ে খেলছে যো খুশ উদোম গায়ে,
রঙ দিয়ে রঙ আঁকার খেলা কলম দিয়ে ছক্কা চালায়
শব্দ দিয়ে শব্দ গড়ে শব্দ তাকে করবে বিয়ে।
****************************************************************
****************************************************************
ভালোবাসি
--ওয়ালিনা ওভি ।
নির্লজ্জ অশ্রুগুলো
চোখের শাসন মানে না ,
ভালোবাসি ।
বেহায়া চোখ নিস্পলক হয়ে যায় পুরোনো ছবির সামনে ,
ভালোবাসি।
গলিত স্মৃতিগুলো
খামচে ধরে হৃদপিন্ড ,
ভালোবাসি ।
কাঙালের মত হাত বাড়িয়ে থাকি
তুমি ছুঁয়ে দেবে তাই ,
ভালোবাসি ।
রিক্ত হাতে মেহেদি লাগিয়ে
রাতভর অপেক্ষা ,
ভালোবাসি ।
গোলাপ বিছানাতে চুড়ি ভাঙার স্বপ্ন নিয়ে
পড়েছি রেশমী চুড়ি ,
ভালোবাসি ।
বিন্দু বিন্দু নোনা জলে দেবো
মধুচন্দ্রিমার অর্ঘ ,
ভালোবাসি ।
মিষ্টি সুখে চোখের কোল বেয়ে গড়িয়ে পড়া
একবিন্দু অশ্রু ,
ভালোবাসি ।
পুরোপুরি অন্ধ হবার আগে
একবার তোমার অস্তিত্বে বিলীনের স্বপ্ন দেখি ,
ভালোবাসি ।
/////////////////////////////////////////////////////////////////////////////////////////////////////////////////
আত্মজা
--গোধূলির আলো ।
তোকে ঘিরে যত স্বপ্ন আমার
দিন যাপন আর আবর্তন
আধার কালো নিশির শেষে
আশ্বিনে তোর আগমন ।
আমার রক্তে গড়া আত্মজ তুই -
সমস্ত অণু-পরমাণুর রসায়ন -
আদরে সোহাগে খুশীতে ভরিয়ে
তুই এনে দিলি নব-জীবন ।
ছোট্ট দুটি আঙুল আঁকরে ধরে
পেরিয়েছি কত মরু-পথ
তোর হাসি কান্নায় রাঙিয়েছি মন
সেই ছন্দে চলেছে জীবন- রথ ।
রক্ত প্রবাহে শুধু নয়,তুই প্রবহমান-
আমার অন্তঃসলিল সত্তায়
আশীর্বাদের রেনু পড়ুক ঝরে
তোর জীবনে ,তোর শুভ কামনায় ।
8888888888888888888888888888888888888888888888888888888888888
রক্ত প্রবাহে শুধু নয়,তুই প্রবহমান-
আমার অন্তঃসলিল সত্তায়
আশীর্বাদের রেনু পড়ুক ঝরে
তোর জীবনে ,তোর শুভ কামনায় ।
8888888888888888888888888888888888888888888888888888888888888
অভিমান
--সুকুমার চৌধুরী ।
আসলে তমি নয়,তুমি তো ভনিতা,সকলেই
পালিয়ে বেড়ায়,মুখ লুকোয়,সারা পৃথিবীতে কত
অভিমান ছড়িয়ে থাকে ।শুধু তুমি ধরা পড়ে
গেছো বলে তোমাকেই দুষী নাসরিন ।
আমারও তো অভিমান হয় ।চুপিসারে বাড়ি
ফিরে বসে থাকি মুখে বই গুঁজে ।তবে কী হয় জানো
আমি যেমন কড়া নেড়ে তোমাকে জাগাই,আমার
একটেরে ঘরের কড়া কখনও নড়ে না ।
সে আসে না,কড়াও নাড়ে না ।আর খুব
ভোরবেলা শুকনো অশ্রুর আঁঠা ধুয়ে ফেলে ভাবি
আসলে তুমি নয়,তুমি তো ভনিতা,সকলেই
পালিয়ে বেড়ায়,মুখ লুকোয় ।
আর সারা পৃথিবীতে এ রকম কত অভিমান ছড়িয়ে
থাকে ।শুধু তুমি ধরা পড়ে গেছো বলে তোমাকেই
দুষী নাসরিন ।
###################################################
অনুগল্প
88888888888888888
সামনে আলো
--কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ।
চৌকাঠের সামনে থমকানো আলোর মধ্যে পড়ে আছে
এই মাত্র ছেড়ে চলে যাওয়া স্বামীর পোয়াতি বউ।দেহের
চারিদিকে আঘাত ,ক্রুর চাহনি ও বিকৃত ঠোঁট নিয়ে এই
তেইশ বছরের মেয়েটা আমার দিদি !ঐ লোকের কিছুক্ষণ
আগের কথাগুলো রোমন্থন করছে ।আর আমি স্থির হয়ে
শুয়ে থাকতে পারছি না ।
গোলমালটা যে আমাকে নিয়েই ,মাসখানেক যাবৎই বুঝতে
পারছিলাম ।এবং দিদি আমাকে ঢেকে রাখতে চায় বুঝে নীরব
থাকতে পারিনি ।নিজে খুঁটে খাবার কথা বলতে গেলেই দিদি এসে
মুখ চেপে ধরতো ।অনুভব করছিলাম এবার বাচ্চা আসছে বলে
জামাইবাবুর ক্ষিপ্ততা সীমা ছাড়াবে ।আজ পেটের আগুন মাথায় উঠে
এল ।পারলাম না এ কলহে বাদসাধতে ।চোখের সামনে দেখছি প্রথমে
ক্ষিদের জ্বালায় ,পরে সারাদেহে নিজের দেওয়া আগুনের জ্বালায় মায়ের
ছটফটানি ।দুই-পা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া লড়ীটার স্বপ্ন আমার কাছে এখনও
জাগ্রত আতঙ্ক ।পারবো না ক্ষিদে-মেটানো দুমুঠো অমৃত থেকে নিজেকে
বঞ্চিত করে..............
না না.......এ কি করছি ? জামাইবাবু ফিরবে দিদি ।আমার দেহের অর্ধেকটা
তো নেইই ,কিন্তু তোমার দেহে যে দুটো প্রাণ ।ঘষটাতে ঘষটাতে এগোলাম
নিশানা এখন চৌকাঠ এবং দুটো ব্যাকুল হাত পেরোনো.........
*********************************************************************
*********************************************************************
*********************************************************************
আবার কবিতা ৷৷
হলুদ পিঁপড়ে
>বিশ্বজিৎ বিশ্বাস ।
উড়ছে ,প্রজাপতি গুলো --
গভীরে ,আরও গভীরে
বড়োই স্যাঁত-স্যাঁতে প্যাচ-প্যাচে লোলুপ মতন
বাসা বাঁধে খোলা শরীরের ওপর ।
রান্না বাটি খেলছে তো খেলছে ,সারা বেলা
বাঁশ ঝাড়ের পাতা আলতো ছুঁয়ে
এই প্রথম পড়ল নাভির ওপর
বিকেলের হিম রোদ.....।
লুটেপুটে ,চেটেপুটে খাচ্ছে হলুদ পিঁপড়ের দল ,
ক্লান্ত স্থির চোখে
গাঢ় অন্ধকার নামে ,
ইচ্ছে ডানায় ভর করে.....।
আবারও প্রজাপতিগুলো
শুঁয়োপোকা হতে চায় ।
*********************************
**********************************
রোড ল্যাম্প
>সৌরভ সাহা
রোড ল্যম্প
আলোকিত করেছি কালো রাস্তাটাকে ।
কিন্তু ব্যর্থ
পেছনে তাকিয়ে দেখছি
সমাজ-সেবী জন-দরদীদের
বিজাতীয় আনন্দলীলা ।
নীরব দেখছি
দেখছি ,দেখছি এবং ভাবছি
লোড শেডিং হোক
অন্ধ হই ।
*********************************************************
*********************************************************
ভাঙা আয়না
>প্রণব দে
এখন আমার সঙ্গী শুধু নিঃসঙ্গ নীরবতা
সংখ্যাতীত না-বলা কথামালা ,
বোকা মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকে
দৃশ্যহীন জানালার পাশে .......
কথা নেই , মান-অভিমান ,বিকার নেই
শুধু নীরবতা
না-বলা কথার ডানা ওয়ালা উঁই
ব্যথার গুমোট আকাশে
দিক শূন্য ওড়ে ।
অস্তিত্বের চিত্রাবলি মাত্রাছাড়া ,
যেন অলৌকিক অবিশ্বাস্য .....
মা বলেছিলেন --
ভাঙা আয়নায় মুখ দেখতে নেই !
************************************************************************************************
প্রিয় পাঠক অনুগ্রহ করে মতামত পোস্ট করুন এবং আপনার লেখাও
পাঠিয়ে দিন।



একতি অনবদ্য প্রয়াস।
উত্তরমুছুনপ্রতিটি লেখাই সুন্দর এবং চমৎকার সম্পাদনা।
সুভেচ্ছা বন্ধু।
এগিয়ে চলুন আগামীর দিকে এভাবেই।